কোরবানির সময়সীমা, করণীয় ও সচেতনতা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা

তবে অনেকেই সময়সীমা ও বিধি-বিধান সম্পর্কে অসচেতন থাকায় ইবাদতটি যথাযথভাবে আদায় করতে ব্যর্থ হন।

ইসলামি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, রাত আসে দিনের আগেই। অর্থাৎ সূর্যাস্তের মাধ্যমেই একটি নতুন দিন শুরু হয়। এই হিসাব অনুযায়ী, ১২ জিলহজের সূর্যাস্ত হয়ে গেলে তা ১৩ জিলহজের সূর্যোদয়ের সমান এবং সে সময় কোরবানি করার সুযোগ আর থাকে না। তাই ঈদের তৃতীয় দিন যারা কোরবানি করতে চান, তাদের অবশ্যই সূর্যাস্তের আগেই তা সম্পন্ন করতে হবে।

রাতেও কোরবানি করা যাবে, তবে সতর্ক থাকতে হবে
বিশেষজ্ঞরা জানান, ঈদের প্রথম দুই দিন (১০ ও ১১ জিলহজ) রাতে কোরবানি করা গেলেও অন্ধকারের কারণে জবাইয়ে ত্রুটি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই সম্ভব হলে দিনের আলোতেই কোরবানি সম্পন্ন করা উত্তম।

ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে কোরবানির জন্য সর্বোত্তম সময় হলো ঈদের প্রথম দিন—১০ জিলহজ। যারা সামর্থ্য রাখেন, তাদের উচিত প্রথম দিনেই কোরবানি সম্পন্ন করা। কোনো বৈধ ওজর ছাড়া কোরবানি দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে না করা অনুচিত। তবে ১১ ও ১২ জিলহজের মধ্যে যেকোনো দিন, সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত কোরবানি করলে তা আদায় হবে।

যদি কেউ পশু কেনার পরও তিন দিনের মধ্যে কোরবানি না করতে পারেন, তবে জীবিত অবস্থায়ই পশুটি দান করে দিতে হবে। আর যদি ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর জবাই করে ফেলেন, তবে তার সমস্ত মাংস সদকা করতে হবে। এমনকি যদি মাংসের মূল্য পশুর জীবিত অবস্থার দামের চেয়ে কম হয়, তবে যে পরিমাণ কম হবে, সেটিও সদকা করতে হবে।

কোরবানি শুধু একটি সুন্নত ইবাদত নয়, বরং সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর এটি ওয়াজিব। যারা ঈদের দিনগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ বাদে অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্যের সম্পদের মালিক হন—নারী বা পুরুষ নির্বিশেষে—তাদের ওপর কোরবানি করা আবশ্যক। কোরবানি ওয়াজিব থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ তা না করেন, তবে একটি কোরবানিযোগ্য পশুর মূল্য সদকা করা ফরজ হয়ে যায়।

কোরবানি সম্পর্কে আরও সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আলেম-ওলামারা। কারণ এটি কেবল পশু জবাই নয়, বরং আত্মত্যাগ ও তাকওয়ার প্রতীক—যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ মেলে।