২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা
দাম কমেছে, বেড়েছেও, আছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

সোমবার, ২ জুন, ২০২৫ ৬:৩৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার এক ভিন্ন বাস্তবতায়।
সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। এবারের বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম ছিল ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়’। বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, আর্থিক খাতের সংস্কার এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি বাজেটের আকার গতবারের তুলনায় কমানো হয়েছে।
বাজেটের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে, মোট বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের জিডিপি’র ১২.৭%। এটি গত অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। মোট রাজস্ব আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর থেকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা আসবে। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ৩.৬%। এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি)তে বরাদ্দ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম।
অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা ৬.৫% এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫.৫%। করভিত্তি সম্প্রসারণ, করহার পুনর্বিন্যাস, ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি এবং সরকারি সেবা ও মাশুল বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। রাজস্বনীতির সঙ্গে মুদ্রানীতির সমন্বয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি সম্প্রসারণ, সুবিধাভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি। কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান, শিল্পায়ন, বিনিয়োগ আকর্ষণ ও ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে গুরুত্ব। ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় হ্রাস, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পিত করনীতি প্রবর্তন। উন্নয়ন বাজেট কমানো হলেও অনুন্নয়ন বাজেট (বেতন, ভর্তুকি, ঋণ পরিশোধ) বাড়ানো হয়েছে।
বিশেষ দিক গুলো হচ্ছে, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য বিশেষ বরাদ্দ। বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমিয়ে উৎপাদন খরচ ১০% কমানোর লক্ষ্য এবং দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা। বাজেট ঘাটতি পূরণে বিদেশি ঋণ ও অনুদানের ওপর নির্ভরতা। মেগা প্রকল্পে নতুন বরাদ্দ নেই, শুধুমাত্র চলমান মাতারবাড়ি উন্নয়ন প্রকল্প অব্যাহত। বাজেটে সংস্কার কমিশন ও টাস্কফোর্সের সুপারিশ প্রতিফলিত হবে, বিশেষ করে আইএমএফ-এর শর্ত পূরণের জন্য।
এই বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, আর্থিক খাত সংস্কার, সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার, এবং অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত করা। বাজেটের আকার গতবারের তুলনায় কিছুটা ছোট হলেও এটি বাস্তবায়নযোগ্য ও সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দাম বাড়বে যেসব পণ্যের:
সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য, অনলাইন কেনাকাটা (ই-কমার্স কমিশন), রড, স্ক্রু-নাট-বোল্ট, প্রসাধনী সামগ্রী, সাবান-শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট, শিশুদের খেলনা, দেশে তৈরি মোবাইল ফোন, গৃহস্থালি প্লাস্টিক সামগ্রী, প্লাস্টিকের তৈজসপত্র, এলপিজি ও দেশে তৈরি এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্ল্যাট (বাণিজ্যিক ভবন/কমার্শিয়াল স্পেস), বলপয়েন্ট কলম, হেলিকপ্টার সার্ভিস, দেশে তৈরি ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন, ব্লেন্ডার-জুসার-মিক্সার-গ্রাইন্ডার, ইলেকট্রিক কেটলি-ইস্ত্রি, রাইস কুকার-প্রেসার কুকার, ব্লেড, দেশে তৈরি লিফট, দেশে তৈরি ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান, থ্রি-হুইলার ব্যাটারি, ওটিটি কনটেন্ট (ডিজিটাল কনটেন্ট), সেলফ-কপি পেপার, ডুপ্লেক্স বোর্ড, কোটেড পেপার, সুতা, ম্যানমেড ফাইবার, সার্জিক্যাল কিটস, শিপ স্ক্র্যাপস গুডস, সিমেন্ট শিট, ক্রেডিট রেটিং সার্ভিস, সেটআপ বক্স, আমদানিকৃত লিফট, LED লাইট, মার্বেল-গ্রানাইট, অ্যালকোহল, ফুড সাপ্লিমেন্ট, বিদেশি চকলেট, লিপস্টিক, বিদেশি লবণ, নারিকেল তেল, স্যামন ফিস, আমদানিকৃত মাংস ও টুনা, লবঙ্গ, এলাচ, জিরা, দারচিনি, মাখন, দুগ্ধজাত পণ্য, চিজ, বিদেশি সবজি, কাজু বাদাম, শুকনা ফল, আপেল ও নাশপাতি, কফি, শিশু খাদ্য, পাস্তা, বিস্কুট, চিপস, জ্যাম-জেলি, জুস ও সস, বার্নিশ, সুগন্ধি, অটো রিকশা।
দাম কমবে যেসব পণ্যের:
চিনি (পরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে), স্যানিটারি ন্যাপকিন (স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি), আইসক্রিম (সম্পূরক শুল্ক ১০% থেকে কমিয়ে ৫%), ভূমি নিবন্ধন ফি (রেজিস্ট্রেশন কর কমানো), নিউজপ্রিন্ট পেপার, ক্যানসারের ওষুধ, ইনসুলিন, ওষুধের কাঁচামাল, এলএনজি, শিল্পের কাঁচামাল, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, টায়ার, কীটনাশক, ফ্রুট ব্যাগ, সার, দেশি তৈরি ই-বাইক, দেশি ডায়াপার, মাটির পাত্র, পেপার প্লেটস, কম্পিউটারের দেশে তৈরি বড় মনিটর (৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত), উড়োজাহাজ ভাড়া, লিথিয়াম-গ্রাফিন ব্যাটারি, প্যাকেটজাত তরল দুধ (স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি), বলপয়েন্ট কলম (স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি), বিদেশি মাছ ও মাংস (সম্পূরক শুল্ক কমানো), বাটার (আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার), হাসপাতালের বেড, হাসপাতালের যন্ত্রাংশ, কোল্ড স্টোরেজ, ব্যাটারি, রেন্ট।
নতুন বাজেটে মূলত ভোগ্যপণ্য, বিলাসবহুল পণ্য, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক্স, নির্মাণসামগ্রী ও কিছু আমদানিকৃত খাদ্যপণ্যের দাম বাড়বে। অন্যদিকে, চিনি, স্যানিটারি ন্যাপকিন, কিছু ওষুধ, স্বাস্থ্যসামগ্রী, নির্দিষ্ট প্রযুক্তিপণ্য, কিছু আমদানিকৃত খাদ্যপণ্য ও কাঁচামালের দাম কমবে। বাজেটের শুল্ক-কর পরিবর্তনগুলো কার্যকর হওয়ার ফলে এসব পণ্যের বাজারমূল্যে পরিবর্তন আসবে।
সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপ্রাপ্ত দিক:
রাজস্ব আদায় ও রাজস্বনীতি: বাজেটের মূল অগ্রাধিকার রাজস্ব আদায় বাড়ানো এবং রাজস্বনীতির সঙ্গে মুদ্রানীতির সমন্বয় সাধন। এনবিআর-এর মাধ্যমে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা আদায়ের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। করের আওতা বাড়ানো, ভ্যাটের হার ও পরিধি বৃদ্ধি, কর রিটার্ন দাখিলের ডিজিটাল ব্যবস্থা, এবং কর সংস্কারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ৬.৫% লক্ষ্য নির্ধারণ এবং বাজেট ঘাটতি কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৩.৬% পর্যন্ত সীমিত রাখা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় কম।
সামাজিক নিরাপত্তা ও মানবিক খাত: নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, খাদ্য ভর্তুকি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। মানুষের জীবনমান, কর্মসংস্থান, মৌলিক অধিকার ও পরিবেশগত ভারসাম্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
‘তিন শূন্য’ লক্ষ্য: বাজেট বক্তৃতায় শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নির্গমন—এই তিনটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে সামগ্রিক উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপ্রাপ্ত দিক:
উন্নয়ন বাজেট (এডিপি): বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। নতুন কোনো মেগা প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, শুধু চলমান মাতারবাড়ি প্রকল্প অব্যাহত রাখা হয়েছে।
বড় অবকাঠামো ও মেগা প্রকল্প: বাজেট বক্তৃতায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এবার প্রবৃদ্ধি-নির্ভর বাজেটের পরিবর্তে মানুষের জীবনমান ও সামাজিক খাতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে; ফলে বড় অবকাঠামো বা নতুন মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
প্রতিরক্ষা, স্থানীয় সরকার, বিদ্যুৎ ও কিছু খাতে বরাদ্দ: স্থানীয় সরকার, প্রতিরক্ষা, বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক শিক্ষার মতো খাতে বরাদ্দ কিছুটা কমানো হয়েছে।
এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে রাজস্ব আদায়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক নিরাপত্তা। অন্যদিকে, উন্নয়ন বাজেট, মেগা প্রকল্প ও বড় অবকাঠামো খাত তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্ব পেয়েছে। বাজেটের মূল দর্শন হচ্ছে—অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করা, যেখানে মানুষের জীবনমান ও মৌলিক চাহিদা অগ্রাধিকার পেয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা আবাসন খাতে (ফ্ল্যাট, বাড়ি, জমি) বিনিয়োগের মাধ্যমে নির্দিষ্ট হারে কর ও জরিমানা পরিশোধ করে বৈধ করা যাবে।
কীভাবে সুযোগ রাখা হয়েছে:
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ মূলত আবাসন খাতে সীমাবদ্ধ থাকবে—যেমন ফ্ল্যাট, বাড়ি, ফ্লোর স্পেস ও জমি কেনার ক্ষেত্রে।
নির্দিষ্ট হারে কর (বর্তমানে প্রতি বর্গমিটারে নির্ধারিত ট্যাক্স) ও জরিমানা দিয়ে এই টাকা বৈধ করা যাবে। চলতি বাজেটে করের হার কিছুটা বাড়ানো হতে পারে, যাতে কালো টাকা বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়।
এই সুযোগ পুরোপুরি বাতিল না করে, আগের মতোই অব্যাহত রাখা হয়েছে, যদিও সরকারের নিজস্ব কমিশন ও নীতিনির্ধারকরা এ ধরনের সুযোগ বাতিলের সুপারিশ করেছিলেন।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঘোষিত হয়েছে, যখন অর্থনীতি নানা বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা গতবারের তুলনায় কিছুটা কম। এতে রাজস্ব আদায়ে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ, এবং আর্থিক খাত সংস্কারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় কিছুটা কমানো হয়েছে এবং মেগা প্রকল্পে নতুন বরাদ্দ নেই, বরং মানুষের জীবনমান, সামাজিক নিরাপত্তা ও আর্থিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব আদায়, সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং খাতভিত্তিক সংস্কার বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
সার্বিকভাবে, এই বাজেট দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রণীত হয়েছে। বাজেটের সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে সরকারের দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সামাজিক অংশগ্রহণের ওপর।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট
১৬০ বার পড়া হয়েছে