সচিবালয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের এক ঘণ্টার কর্মবিরতি

বৃহস্পতিবার , ২৯ মে, ২০২৫ ৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়সহ সারাদেশে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন সরকারি কর্মচারীরা।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হলে আগামী রোববার নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ডাকে পালিত এ কর্মসূচিতে মাঠ পর্যায়ের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মচারীরাও অংশ নেন।
বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ফোরামের নেতা বাদীউল কবির বলেন, "সংশোধিত আইনের ধারা ৩৭ক সরকারি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত শঙ্কার বিষয়। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
এ সময় কো-চেয়ারম্যান মুহা. নূরুল ইসলাম বলেন, "প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার জাপান সফর শেষে দেশে ফিরলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব তার কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরবেন। ফলপ্রসূ আলোচনা না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।"
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার পাঁচজন সচিবের সঙ্গে কর্মচারীদের বৈঠকের পর একদিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছিল। বুধবার তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদের কাছে আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, "মন্ত্রিপরিষদ সচিব সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তিনি বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করবেন।"
এদিকে, সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে গত ২২ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়। এতে নতুন ‘৩৭ক’ ধারা সংযোজন করা হয়েছে, যার আওতায় কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত অভিযোগে ছাঁটাই, পদাবনতি বা বরখাস্তের বিধান রাখা হয়েছে। এই ধারা নিয়েই মূল আপত্তি কর্মচারীদের।
এদিকে, ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর ব্যানারে ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারাও গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো কলমবিরতি পালন করেছেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলা এ কর্মসূচিতে প্রশাসন ক্যাডারবহির্ভূত ১২ কর্মকর্তার সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি সমান পদোন্নতি ও পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিও তোলা হয়।
এমন অবস্থায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চট্টগ্রাম সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। এক বিবৃতিতে সংগঠনের সদস্য সচিব ডা. শুরশিদ জামিল বেআইনি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সরকারি চাকরি আইনে সংশোধনী এনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শৃঙ্খলার নামে দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশঙ্কায় কর্মচারীরা সজাগ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকেরা। এখন সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে প্রশাসনের কর্মচারীরা।
১৩৩ বার পড়া হয়েছে