সর্বশেষ

মতামত

পদত‍্যাগ নাকি কঠোর হবেন ইউনূস?

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫ ৮:০২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ বর্তমানে এক গভীর ও বহুস্তরীয় রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে জল্পনা, রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর চাপ, সেনাপ্রধানের স্পষ্ট বার্তা, রাজপথে লাগাতার আন্দোলন—সব মিলিয়ে দেশ এক অনিশ্চিত ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি।

বাংলাদেশ বর্তমানে গভীর রাজনৈতিক অস্থিরতা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতার মুখোমুখি। জাতিকে এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন বহুমাত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগ, যা শুধু নির্বাচন নয়, টেকসই সংস্কার, সংলাপ এবং শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ার ওপর নির্ভরশীল।

ড. ইউনূস নিজেই উপদেষ্টা পরিষদে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য না এলে তিনি কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। যদিও কিছু সূত্র একে গুজব বলছে, তবু তাঁর পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা এবং অনিশ্চয়তা স্পষ্ট। ড. ইউনুস বারবার বলেছেন, বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হলে আগে প্রয়োজন যথাযথ সংস্কার ও রাজনৈতিক ঐক্য। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “সংস্কার ছাড়া কিংবা ঐক্য ছাড়া নির্বাচন দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না”। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সংস্কার ও নির্বাচন—দুটোই সমান্তরালে চলতে হবে, এবং কোনো একটি ছাড়া অপরটি অর্থহীন হবে। ড. ইউনুস আরও বলেছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে তা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবে না এবং সরকারের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। তিনি মনে করেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বর্তমান নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। তার ভাষায়, “সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না”।

 

ড. ইউনুস নিজেই যদি সংস্কার ছাড়া, তড়িঘড়ি করে নির্বাচন আয়োজন করেন, তাহলে সেটি তার ঘোষিত নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে এবং এতে তার নেতৃত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হবে—এটি তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন। ফলে, তিনি নিজেকে বিতর্কিত করতে চান না বলেই বারবার সংস্কার ও ঐক্যের ওপর জোর দিচ্ছেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রমবর্ধমান নির্বাচনের চাপের মুখে ড. ইউনূস দুটি পথের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন: তিনি হয় পদত্যাগ করতে পারেন, নয়তো কঠোর অবস্থান নিতে পারেন। বিভিন্ন সূত্রে স্পষ্ট, ড. ইউনূস নিজেই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য না এলে এবং সংস্কারের সুযোগ না থাকলে তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তার বক্তব্য, “আমি যদি কাজই না করতে পারি, তাহলে আমার এখানে থেকে কী লাভ?” রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ও সহযোগিতা না পেলে তার পদত্যাগই যৌক্তিক হবে বলে তিনি মনে করেন।

অন্যদিকে, কিছু রাজনৈতিক ও নাগরিক নেতারা তাকে অনুরোধ করেছেন, দেশের ভবিষ্যৎ ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে তিনি যেন শক্ত অবস্থানে থাকেন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যের পথে আনতে চেষ্টা করেন। তবে, এই কঠোর অবস্থান নেওয়া মানে হবে—সংস্কার ছাড়া নির্বাচন না দেওয়া, কিংবা রাজনৈতিক চাপের মুখেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকা।

আবার অন‍্যদিকে, সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, “ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত” এবং সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেনাপ্রধান নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে অনড়, এবং তিনি সরকারের কিছু সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন—বিশেষ করে সেনাবাহিনীকে অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া, কিংবা রাখাইন করিডোর ইস্যুতে।

ড. ইউনূস যদি রাজনৈতিক চাপের মুখেও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন না দেওয়ার কঠোর অবস্থান নেন, তাহলে তা সেনাপ্রধানের ঘোষিত সময়সীমার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। ফলে, সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বাড়তে পারে, যা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

 

সাম্প্রতিক সময়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও ড. ইউনুসের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও মতানৈক্য তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষত নির্বাচন ও রাখাইন করিডর ইস্যুতে সেনাপ্রধান প্রকাশ্যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং স্পষ্ট বলেছেন, “২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে”। তিনি সেনাবাহিনীর কাজে হস্তক্ষেপ বরদাশত করবেন না, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বড় সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করতে হবে। রাখাইন করিডর ইস্যুতে সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারির পর সরকার কার্যত ইউ-টার্ন নিতে বাধ্য হয়েছে, যা দেখায় সেনাবাহিনীর চাপের মুখে সরকার নীতিগতভাবে পিছু হটেছে।

ড. ইউনুস পদত্যাগ করলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর ও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তার পদত্যাগের সম্ভাবনা ইতিমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং বিভিন্ন পক্ষ এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ড. ইউনুস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে চলমান সংকট মোকাবিলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। তার পদত্যাগে সরকারের নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি হবে, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা আনতে পারে। তার পদত্যাগ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরও বিভাজন ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে, নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে যে টানাপোড়েন চলছে, তা আরও তীব্র হতে পারে। ছাত্র ও নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন পক্ষ ইতিমধ্যে রাজপথে সক্রিয়। নেতৃত্বহীন অবস্থায় আন্দোলন, বিক্ষোভ ও সহিংসতার আশঙ্কা বাড়বে। অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতায় সেনাবাহিনী কিংবা অন্য কোনো শক্তি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো, অন্তর্বর্তী সরকারের স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্যতার দিকে নজর রাখছে। নেতৃত্বের পরিবর্তন তাদের আস্থাকে নড়বড়ে করতে পারে।

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে সরাসরি প্রকাশ্য রাজনীতি করতে না পারলেও, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে পারে। নিষেধাজ্ঞার ফলে দলটি প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ, প্রচারণা, গণমাধ্যমে বক্তব্য, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় থাকতে পারছে না। তবে ইতিহাস বলছে, অতীতে (১৯৫৮, ১৯৭৫, ২০০৭-০৮) নিষিদ্ধ ও সংকটকালীন অবস্থায়ও আওয়ামী লীগ গোপনে সাংগঠনিক সংহতি বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের কারণে আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিত ও প্রভাবশালী। নিষেধাজ্ঞার সুযোগে তারা ভারতের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা ও কূটনৈতিক মহলে চাপ বাড়াতে পারে, যাতে দলটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং আন্তর্জাতিক সহানুভূতি তৈরি হয়। নিষিদ্ধ অবস্থায় আওয়ামী লীগ প্রকাশ্য রাজনীতিতে সরাসরি সুযোগ নিতে না পারলেও, গোপন সাংগঠনিক সংহতি, আন্তর্জাতিক চাপ, আইনি লড়াই, বিকল্প প্ল্যাটফর্ম, এবং সহানুভূতির রাজনীতি—এসব কৌশল ব্যবহার করে ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতে এবং রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রাখতে পারে। তবে, প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফেরার পথ পুরোপুরি বিচার ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, ড. ইউনূস সেনাপ্রধানসহ তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করছেন। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কঠোর অবস্থানে যেতে হলে, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ সমর্থন ও সমন্বয় অপরিহার্য। বর্তমান সংকটে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি। অভ্যন্তরীণ দ্বিধা বা বিলম্ব সংকটকে আরও ঘনীভূত করতে পারে। ড. ইউনূসকে স্পষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে, এবং কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। ড. ইউনুস যদি সেনাপ্রধানের প্রধান দাবিগুলো—বিশেষত দ্রুত নির্বাচন, সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব সংক্রান্ত উদ্বেগ—মেনে নেন, তাহলে তিনি সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ মোকাবিলা করে কিছুটা কঠোর অবস্থান নিতে পারেন। অর্থাৎ, সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যপন্থা খুঁজে নেওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব। ড. ইউনূস নিজেই বলেছেন, চাপের মুখে থাকা তার জন্য ভালো, কারণ এতে প্রশাসনের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। তিনি আরও বলেছেন, “আমরা আমাদের সাধ্যমতো কঠোর হয়ে…হয়তো যে কঠোর মানুষের মনে আছে, অত দূর হতে পারছি না। কিন্তু আমরা যে এত দিন যত কঠোর হইনি, অত কঠোর এখন হতে চাচ্ছি”। অর্থাৎ, তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর চাপের মুখে নতি স্বীকার না করে, বরং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সংস্কার ও নির্বাচন সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।

বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের “সহজ উপায়” বলতে আসলে কোনো ম্যাজিক সমাধান নেই, কারণ পরিস্থিতি বহুস্তরীয় ও জটিল। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস ও বিভাজন কমাতে অবিলম্বে খোলামেলা সংলাপ শুরু করা জরুরি। সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ—সব পক্ষের প্রতিনিধিত্বে একটি ফোরাম গঠন করে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা খুঁজে বের করা সহজ ও কার্যকর উপায়।

বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুযায়ী, সব প্রধান রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নয়—এটি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিএনপি এখন মাঠে সবচেয়ে সংগঠিত ও সক্রিয় দল। তারা নির্বাচনের জন্য সারাদেশে সাংগঠনিক পুনর্গঠন, প্রার্থী প্রস্তুতি, জনসংযোগ ইত্যাদি কার্যক্রম চালাচ্ছে। দলটির নেতৃত্ব ও কর্মীরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বলেই দাবি করছে এবং দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে এবং তাদের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ। ফলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না এবং দলটির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বিচারিক প্রক্রিয়া ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের ওপর।

 

জামায়াতের নিবন্ধন ২০১৮ সাল থেকে বাতিল এবং তারা বর্তমানে প্রতীকহীন। দলটি নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে আপিল বিভাগে আইনি লড়াই চালাচ্ছে, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

 

এনসিপি ও অন্যান্য নতুন দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছে, তবে এখনো নিবন্ধন পায়নি। নিবন্ধন সংক্রান্ত আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা পায়নি।
ছোট ছোট ইসলামি ও বামপন্থী দল, নতুন প্ল্যাটফর্ম, ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের গড়া সংগঠন—এরা কেউ কেউ মাঠে সক্রিয়, কেউবা নিবন্ধন বা সাংগঠনিক সংকটে।

 

তাই বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচনী মাঠে একমাত্র বড় ও সংগঠিত দল হিসেবে বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, জামায়াত নিবন্ধনহীন, এনসিপি ও নতুন দলগুলো নিবন্ধনের অপেক্ষায়, আর অন্য ছোট দলগুলো সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। এই বাস্তবতায় অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এখনই সম্ভব নয়—নিবন্ধন, বিচারিক প্রক্রিয়া, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক সংলাপ ছাড়া।

 

অতএব, নির্বাচনকে অর্থবহ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে হলে দ্রুত রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন সমস্যা, নিষেধাজ্ঞা, আইনি জটিলতা ও সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে—না হলে এককভাবে বিএনপি ছাড়া আর কেউ কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে না।

 

পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা দুই এক দিনের মধ্যেই বোঝা যাবে। তবে বাংলাদেশের সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে—অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ, টেকসই সংস্কার, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন। সংকট নিরসনে কোনো একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একতরফা সিদ্ধান্ত নয়, বরং জাতীয় ঐক্য ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে পথ খুঁজে নিতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, সংখ্যালঘু ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।
লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট 

১৩৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন