মানবিক করিডোর নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, হবেও না : নিরাপত্তা উপদেষ্টা

বুধবার, ২১ মে, ২০২৫ ১০:১৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে বাংলাদেশের কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়নি বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মো. খালিলুর রহমান।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই—মানবিক করিডোর বিষয়ে আমাদের কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি এবং এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করার প্রশ্নই ওঠে না।”
তিনি আরও বলেন, “করিডোর বলতে বোঝায়—দুর্যোগ বা সংকটকালে একটি নির্দিষ্ট এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা। কিন্তু আমরা কাউকে সরিয়ে নিচ্ছি না। সুতরাং করিডোরের প্রয়োজনই নেই।”
জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়ে অনুরোধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “রাখাইনে বর্তমানে যেহেতু অন্য পথে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না, জাতিসংঘ শুধু বলেছে—আমাদের সীমান্ত দিয়ে কিছু সহযোগিতা পৌঁছাতে সহযোগিতা করতে। এটাই বাস্তবতা।”
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, “জাতিসংঘ বিগত ছয়-সাত বছর ধরে আমাদের চোখের সামনেই রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে। তারা শুধুই বলেছে—একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট ব্যবহার করে যেন তারা নিজেদের ত্রাণসামগ্রী রাখাইনের ভেতরে পৌঁছে দিতে পারে। এটা সামরিক বা বাণিজ্যিক কোনো বিষয় নয়।”
তিনি আরও বলেন, “অনেকে প্রশ্ন তুলছেন আমরা করিডোর নিয়ে আলোচনা করিনি কেন। আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই—যার কোনো অস্তিত্বই নেই, সে বিষয়ে আলোচনা হবে কীভাবে? এটা বাস্তবতার বাইরে।”
রাখাইনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেন খালিলুর রহমান। তিনি বলেন, “যতদিন রাখাইনে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হবে, ততদিন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। এখনো প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি হয়নি।”
এর আগে ৪ মে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারেও তিনি বলেছিলেন—বাংলাদেশ কোনো ‘মানবিক করিডোর’ বিষয়ে আলোচনা করেনি, বরং ‘মানবিক চ্যানেল’ হিসেবে সাময়িক একটি রুট ব্যবহারের বিষয়টি জাতিসংঘ তুলেছে। করিডোর ও চ্যানেল—এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
এদিকে, রাখাইন এলাকায় মানবিক করিডোর প্রসঙ্গ ঘিরে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সমর্থকরা একে মানবিক দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে দেখলেও, সমালোচকদের আশঙ্কা—এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তবে সরকার বারবারই আশ্বস্ত করছে, এই ব্যবস্থার ব্যবহার শুধুমাত্র মানবিক সহায়তার সীমিত প্রয়োজনে এবং এর মাধ্যমে কোনো সামরিক বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলবে না।
১৩৫ বার পড়া হয়েছে