ভারত থেকে পুশইন ব্যক্তিদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন

মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫ ৯:২৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে সম্প্রতি সংঘটিত এক অমানবিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আরও এক ধাপ জোরপূর্বক বাংলাদেশে লোকজন পাঠিয়েছে।
জানানো হয়েছে, গত ৯ মে ভোরের দিকে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ জন বাংলাদেশি ও ৩ জন ভারতীয়সহ মোট ৭৮ জনকে জোরপূর্বক পুশইন করা হয়। এদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের দাগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
অভিযানে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা জানান, তাদেরকে গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় ২৬ এপ্রিল। সেই সময় তাদেরকে হাত ও চোখ বাঁধা হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চালানো হয়। এরপর ৬ মে তাদের ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কলকাতায় আনে এবং পরে জাহাজে করে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় নিয়ে আসে। সেখানে তাদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ভারতীয় পুলিশ তাদেরকে বস্তিগুলোতে হানা দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়, পরিবারের সদস্যদের সামনে অমানবিক নির্যাতন চালায়, চোখ বেঁধে ভিন্ন ভিন্ন স্থানান্তর করে। পরে জাহাজে করে তাদের বাংলাদেশের সুন্দরবনের আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান বলেন, “৯ মে ভোরে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ বাংলাদেশি ও ৩ ভারতীয় মুসলিমকে জোরপূর্বক পুশইন করা হয়। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে গুজরাটে বসবাস করছিল এবং বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিল। জানা যায়, ২৬ এপ্রিল গভীর রাতে তাদেরকে ভারতীয় প্রশাসন আটক করে।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের কোস্টগার্ডের সাহায্যে ১০ মে তাদের উদ্ধার করা হয় এবং প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, “ভারতীয় পুলিশ তাদের হানা দিয়ে বাড়িঘর উড়িয়ে দেয়, পরিবারের সদস্যদের সামনে অমানবিক নির্যাতন চালায়। তাদের চোখ বেঁধে ভিন্ন ভিন্ন বিমানযোগে ভারতের বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তর করা হয়। পরে জাহাজে করে তাদের সুন্দরবনে রেখে যায়। সেখানে অবস্থানকালে শারীরিক নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের শিকার হন তারা।”
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, “১১ মে ৭৮ জনকে কোস্টগার্ডের মাধ্যমে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ৭৫ বাংলাদেশিকে আজ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
অভিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনার ওপর ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশের বিভিন্ন মহলে।
১১৬ বার পড়া হয়েছে