দেশে প্রথমবারের মতো সিভিল সার্জন সম্মেলন, স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের দাবি

মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫ ৩:৫৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো সিভিল সার্জন সম্মেলন। সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে সারাদেশের সিভিল সার্জনরা অংশ নেন। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের আদলে আয়োজিত এই উদ্যোগে স্বাস্থ্য খাতের নানা চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে অবৈধ ক্লিনিক, ভুয়া চিকিৎসক, দালাল চক্র এবং ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে সীমিত পরিসরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা চেয়েছেন সিভিল সার্জনরা। একইসঙ্গে হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘স্বাস্থ্য পুলিশ’ বা আনসার মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, "স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ক্ষমতা ও হাসপাতালের জন্য আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থাই হতে পারে কার্যকর সমাধান।"
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, "স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহির ঘাটতি রয়েছে। শুধুমাত্র জনবল বৃদ্ধি করলেই সমাধান হবে না। এর জন্য কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার।"
তিনি জানান, ইতোমধ্যে সাত হাজার সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টির মাধ্যমে চিকিৎসকদের পদোন্নতির সুযোগ এবং নতুন তিন হাজার চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, "দেশে চিকিৎসার ৭০ শতাংশ খরচ রোগীর পকেট থেকে যায়, যার মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ খরচ হয় ওষুধে। সরকার যদি যৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে, তাহলে সাধারণ মানুষের উপর চাপ অনেকটাই কমবে।"
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান জানান, সম্মেলনের উদ্দেশ্য মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও স্বচ্ছ করা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, "সিভিল সার্জনদের দায়িত্বশীল ও তদারকিমূলক ভূমিকা রাখতে হবে। হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করাও জরুরি।"
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চলছে। আয়োজকরা আশা করছেন, মাঠ পর্যায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে এই সম্মেলন স্বাস্থ্যখাতে বাস্তবমুখী নীতিনির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
১০৩ বার পড়া হয়েছে