সর্বশেষ

জাতীয়ভারতে পাঠানো বাংলাদেশের চিঠি পর্যালোচনায় নয়াদিল্লি
নির্বাচন ও গণভোট একসাথে : অধ্যাদেশ জারি, জানানো হলো আটটি মূল তথ্য
দেশের ৬৪ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার নিয়োগ, প্রজ্ঞাপন জারি
লটারি ভিত্তিক এসপি নিয়োগে মেধাবীদের কেউ বাদ পড়েনি: উপদেষ্টা
জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ভোট প্রতিহত করলে ব্যবস্থা নেবে ইসি
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এখন ঢাকা, শীর্ষে জাকার্তা : জাতিসংঘ
কৃষকের স্বার্থে আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত : উপদেষ্টা
বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আবারও যমুনামুখী মিছিল
উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারের জন্য সতর্কতা
খেলাপি ঋণ এখন ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা
বিএমইউ হাসপাতালে আগুন, ১৮ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে
সারাদেশবাগেরহাটে কিশোরীর আত্মহত্যা, পুলিশ ময়নাতদন্তের অপেক্ষায়
বাউল শিল্পীদের ওপর হামলা: অজ্ঞাত বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মামলা
পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হালদা নদীতে ড্রেজার, লাখ টাকা জরিমানা
ফেসবুকে কাবা শরিফ নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট: নগরকান্দায় যুবক আটক
আন্তর্জাতিকপাকিস্তানের বিমান হামলায় আফগানিস্তানের ১০ জন নিহত
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ৪
ইথিওপিয়ার অগ্ন্যুৎপাতের ছাইয়ের মেঘ ভারতে, বহু ফ্লাইট বাতিল
খেলাবাফুফে’র টাইটেল স্পন্সর ঘিরে নতুন বিতর্ক: কোনো চুক্তি হয়নি, দাবি পেট্রোনাসের
মেসির জাদুতে ইন্টার মায়ামি ফাইনালে, সিনসিনাটিকে ৪-০ গোলে হারালো
ফিচার

মালয়েশিয়ার অবকাঠামোগুলো বিদেশি কোম্পানির হাতে: আর বাংলাদেশ?

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:৫৪ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
মালয়েশিয়া দ্রুত উন্নয়নশীল অবকাঠামো অর্থনীতির মডেল হিসেবে পরিচিত হলেও, দেশটির বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এখন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে বিদেশি কোম্পানির হাতে পরিচালিত হচ্ছে।

রেল, বিদ্যুৎ, সড়ক ও বন্দর—এসব খাতে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব বা PPP মডেলের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ১৫ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রণ ও আয়ের নিশ্চয়তা পেয়েছে।

চীনা কোম্পানির হাতে পূর্ব উপকূল রেললাইন
মালয়েশিয়ার সবচেয়ে আলোচিত অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর একটি East Coast Rail Link (ECRL)। এটি পশ্চিম উপকূলের ক্লাং ভ্যালি থেকে পূর্ব উপকূলের কেলান্তান পর্যন্ত প্রায় ৬৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প, যার EPC কনট্রাক্টর হিসেবে কাজ করছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি China Communications Construction Company (CCCC)। প্রকল্পটি মালয়েশিয়ার সরকারি মালিকানাধীন Malaysia Rail Link (MRL) এবং CCCC–এর যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে, যেখানে নির্মাণ ব্যয় ও প্রযুক্তিতে চীনা প্রভাব সুস্পষ্ট।
সরকারের সঙ্গে সংশোধিত চুক্তি অনুযায়ী, প্রকল্পটির লক্ষ্যনির্ধারিত সমাপ্তি ২০২৭ সালের মধ্যে, এবং এরপর দীর্ঘমেয়াদি অপারেশন ও মেইনটেন্যান্সের যৌথ কাঠামো থাকবে, যেটি সার্বিকভাবে প্রায় ৩০ বছর পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সমালোচকদের অভিযোগ, দীর্ঘমেয়াদি এই বন্দোবস্ত মালয়েশিয়াকে চীনা আর্থিক প্রভাব ও ঋণনির্ভরতার মধ্যে আরও গভীরে টেনে নিচ্ছে।

সিঙ্গাপুরের অংশীদারিত্বে RTS লিংক
জোহর বাহরু থেকে সিঙ্গাপুরের উডল্যান্ডসকে সংযোগকারী Rapid Transit System (RTS) Link প্রকল্প মালয়েশিয়া–সিঙ্গাপুর দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পে সিঙ্গাপুরের সরকারি নিয়ন্ত্রিত পরিবহন অপারেটর SMRT এবং সংশ্লিষ্ট ইনভেস্টমেন্ট ভেহিকেলগুলোর অংশগ্রহণ রয়েছে, অন্যদিকে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে Prasarana ও সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো জড়িত।
RTS লিংকের অপারেশনাল কনসেশনও দীর্ঘমেয়াদি—সম্ভাব্যভাবে ২৫ থেকে ৩০ বছর—যার মধ্যে সিস্টেম পরিচালনা, ভাড়া সংগ্রহ এবং রক্ষণাবেক্ষণে সিঙ্গাপুরের অপারেটরদের প্রভাব বলয় তৈরি হবে। সীমান্তবর্তী এই রেলসেবা চালু হলে দু’দেশের শ্রমবাজার ও নগরায়ণে নতুন গতি আসবে, তবে কনসেশন কাঠামোতে সিঙ্গাপুরের কারিগরি ও আর্থিক প্রাধান্য স্পষ্ট থাকবে বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা।

টোল হাইওয়ে: দীর্ঘ ৩০–৫৫ বছরের কনসেশন
মালয়েশিয়ার টোল হাইওয়ে খাত PPP ও প্রাইভেটাইজেশনের প্রাচীনতম পরীক্ষাগার। North–South Expressway থেকে শুরু করে একের পর এক শহরাঞ্চলীয় এক্সপ্রেসওয়ে বেসরকারি কনসেশন কোম্পানির হাতে হস্তান্তর করা হয়েছিল, সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত মেয়াদী BOT বা অনুরূপ কনসেশন মডেলে।
বেশিরভাগ হাইওয়ে অপারেটর স্থানীয় (যেমন PLUS, Gamuda জোটের Litrak ইত্যাদি), তবে এসব কনসেশন কোম্পানির পিছনে আন্তর্জাতিক বন্ড বাজার, জাপান ও ইউরোপের আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিদেশি বিনিয়োগকারীর দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন রয়েছে। অনেক এক্সপ্রেসওয়ের মূল কনসেশন ৩০–৪০ বছর হলেও, ট্রাফিক অনুমান ও ঋণ পুনর্গঠনের নামে অনেক চুক্তি ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে; সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার কিছু কনসেশন পুনর্গঠন করে টোল বৃদ্ধির চাপ সামাল দিতে চাইছে।

সবুজ জ্বালানি ও সোলার IPP: স্প্যানিশ–মালয়েশিয়ান যৌথ বিনিয়োগ
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতেও মালয়েশিয়া বিদেশি কোম্পানিকে দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তির মাধ্যমে আকৃষ্ট করেছে। উদাহরণ হিসেবে কেদাহ রাজ্যের Sungai Petani–তে প্রায় ১১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি সোলার IPP প্রকল্পে স্পেনভিত্তিক কোম্পানি Zelestra ও এর সাবসিডিয়ারি Solarpack Asia Sdn Bhd ৪৯ শতাংশ ইকুইটি অংশীদার হয়েছে, বাকি অংশ মালয়েশিয়ান OCK Group Bhd–এর হাতে।
এই ধরনের সোলার IPP প্রকল্পের সঙ্গে জাতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি Tenaga Nasional Berhad (TNB) সাধারণত ২১–২৫ বছরের Power Purchase Agreement (PPA) সই করে, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ট্যারিফে দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ কেনার গ্যারান্টি দেয়। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে স্থিতিশীল আয়ের নিশ্চয়তা পায়, আর মালয়েশিয়া নিজস্ব অর্থ ছাড়াই নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা বাড়াতে পারে।

বন্দর ও শিল্পাঞ্চল: কুয়ান্তান পোর্টে চীনা উপস্থিতি
চীন–মালয়েশিয়া কৌশলগত সহযোগিতার আরেকটি বড় উদাহরণ Pahang প্রদেশের Kuantan Port ও লাগোয়া Malaysia–China Kuantan Industrial Park। বন্দর উন্নয়ন ও শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার এই প্রকল্পে চীনা Guangxi Beibu Gulf Port Group–এর মতো রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি মালয়েশিয়ান অংশীদারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ ও অপারেশনে যুক্ত আছে।
Kuantan Port–এর কনসেশন মেয়াদও দীর্ঘমেয়াদি; বন্দর আধুনিকায়ন, গভীর বার্থ নির্মাণ ও শিল্পপার্ক উন্নয়নের বিনিময়ে কয়েক দশক ধরে অপারেশনাল অধিকার ভোগ করবে এই যৌথ উদ্যোগ কোম্পানি। দক্ষিণ চীন সাগর–মুখী এই বন্দরকে “বেল্ট অ্যান্ড রোড” করিডরের একটি গুরুত্বপূর্ণ নোড হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিমানবন্দর ও আর্থিক পুঁজি
Kuala Lumpur International Airport (KLIA) ও অন্যান্য আঞ্চলিক বিমানবন্দর Malaysia Airports Holdings Berhad (MAHB)–এর মাধ্যমে পরিচালিত হলেও, কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য অংশ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এবং গ্লোবাল ফান্ড ও বিদেশি ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টরদের মালিকানায় রয়েছে। ফলে বিমানবন্দর অবকাঠামোর আয় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রতিনিয়ত বৈশ্বিক পুঁজি বাজারের প্রভাব কাজ করছে। ভবিষ্যতে টার্মিনাল সম্প্রসারণ ও নতুন PPP প্রকল্পে সরাসরি বিদেশি অপারেটর আনার সম্ভাবনাও নীতিনির্ধারণী আলোচনায় রয়েছে।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, সার্বভৌমতা ও জনস্বার্থের প্রশ্ন
মালয়েশিয়ার PPP ও প্রাইভেটাইজেশন নীতির সমর্থকেরা বলছেন, সরকারি বাজেটের সীমাবদ্ধতায় বিদেশি ও বেসরকারি বিনিয়োগ ছাড়া এমন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল না। অন্যদিকে সমালোচকদের অভিযোগ, ২০ থেকে ৫০ বছরের কনসেশন, ট্যারিফ গ্যারান্টি ও লুকানো আর্থিক ঝুঁকি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে নীতিনির্ধারণী সার্বভৌমতা আংশিকভাবে বিদেশি কোম্পানির হাতে চলে যাচ্ছে।
এখন মালয়েশিয়া PPP 3.0 ও ২০৩০ মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে আরও নতুন প্রকল্প বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরছে, যেখানে অন্তত তিন ডজন নতুন PPP প্রকল্পের প্রস্তুতি চলছে। এই প্রেক্ষাপটে ECRL থেকে শুরু করে সোলার IPP, বন্দর ও হাইওয়ে—সবখানেই দীর্ঘমেয়াদি PPP চুক্তি মালয়েশিয়ার অর্থনীতি, নীতি স্বাধীনতা এবং সাধারণ মানুষের সেবাপ্রাপ্তিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হচ্ছে।

আর বাংলাদেশ
২০০৫ সালে চুক্তিতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজকে এক বছরের মাথায় হটিয়ে দিয়ে দুই দশক ধরে যা রইল, তা হলো এক জেদি ‘জাতীয়তাবাদ’, যার ভেতর নেই না অবকাঠামো, না দক্ষতা, না আন্তর্জাতিক মানের কোনো সম্মানজনক অবস্থান।

যারা তখন “বিদেশি অপারেটর মানেই সার্বভৌমত্ব বিক্রি” বলে আন্দোলন করেছে, আজ তারাই বন্দর–চুক্তির বিরোধিতায় একই স্লোগান তুলছে—কিন্তু বাস্তবতা হলো, ২০ বছরের এই ‘নিজেদের হাতে রাখা’র ফলেও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখনো একটি আঞ্চলিক সেকেন্ডারি এয়ারপোর্টের বেশি কিছু হতে পারেনি, বরং বিনিয়োগ ও ম্যানেজমেন্টের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে বারবার। ঠিক এই জায়গাটায় বন্দর–বিতর্কও দাঁড়িয়ে আছে দ্বিমুখী এক ফাঁদে: একদিকে অতীতের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিকে আড়াল করা “আমরাই চালাব” ধরনের ব্যর্থতার অহংকার, অন্যদিকে যে কোনো সমালোচনাকে “স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র” বলে উড়িয়ে দেওয়ার সুবিধাজনক প্রচার। অথচ প্রকৃত প্রশ্ন হওয়া উচিত—বিদেশি হোক বা স্থানীয়, অপারেটর কে তা নয়; চুক্তি কতটা স্বচ্ছ, কতটা প্রতিযোগিতামূলক, কতটা সময়–সীমাবদ্ধ ও পারফরম্যান্স–নির্ভর, আর জনগণের কাঁধে চাপানো দায় কতটা যুক্তিযুক্ত।

মালয়েশিয়া দেখিয়েছে, বিদেশি পুঁজি ও গ্লোবাল অপারেটরকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায়, যদি রাষ্ট্র শক্ত হাতে দরকষাকষি করে, চুক্তি খোলামেলা রাখে এবং নিজস্ব রেগুলেটর ও নীতি–অধিকার ছাড়ে না; বাংলাদেশ যদি আবারও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পুরনো ভুলের পুনরাবৃত্তি করে, তবে বন্দরেও দরজা বন্ধ রেখে উন্নয়ন হারাবে, আর দরজা খুললেও যদি আদানি–ধরনের অন্ধকার গোপন চুক্তি করে বসে, তবে হারাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম—বুদ্ধিমানের কাজ একটাই: স্লোগানের দুই প্রান্ত এড়িয়ে কঠোর স্বচ্ছতা, প্রতিযোগিতা আর জনজবাবদিহির শর্তে শক্ত PPP, যেখানে উন্নয়নও হবে, আর রাষ্ট্রের মান–মর্যাদাও দামি সম্পদের মতো আচরণ পাবে।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট

১২৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন














সর্বশেষ সব খবর
ফিচার নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন