কুষ্টিয়ার খোকসায় নারী নির্যাতন মামলায় ইউপি সচিব গ্রেপ্তার, জেলহাজতে প্রেরণ

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫ ৫:১১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ার খোকসায় স্ত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলায় ইউনিয়ন পরিষদ সচিব জাহিদ হাসানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুপুরের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে নিজ বাড়ি আমবাড়িয়া গ্রাম থেকে খোকস গোপগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ জাহিদ হাসানকে আটক করা হয়। সে একই গ্রামের আব্দুস সোবাহান মন্ডলের ছেলে। স্ত্রী মোছাঃ ঝুমুর খাতুন তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে খোকসা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদির দুইটি শিশু কন্যা সন্তান রয়েছে।
খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মঈনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় আটক ইউপি সচিব জাহিদ হাসানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটক জাহিদ গোপগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে কর্মরত আছেন।
বাদীর এজাহার ও পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই জাহিদ হাসান তার স্ত্রী ঝুমুর খাতুনের উপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। বুধবার (৮ অক্টোবর) স্বামীর পরকীয়া ও অন্য নারীতে আসক্তির বিষয়ে কথা বললে দুই সন্তানের মা ঝুমুরের উপর হামলে পড়েন আসামী জাহিদ। বেধড়ক মারপিটের এক পর্যায়ে ঝুমুর জ্ঞান হারালে সন্তানসহ ঘরে আটকে রেখে চলে যান তিনি। ঘন্টাখানেক পর জ্ঞান ফিরলে পরিবারের লোকদের ফোনে বিষয়টি জানায়। তারা গিয়ে ঝুমুরকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা করান। এ ঘটনায় ঝুমুর খাতুন বাদী হয়ে খোকসা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। (যার নম্বর ৩, তারিখ ১০ অক্টোবর, ২০২৫) এ মামলাতেই শুক্রবার সকালে বিশেষ অভিযান চালিয়ে জাহিদ হাসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, বাদীর ৮ ও ৫ বছর বয়সী দুটি শিশু কন্যা সন্তানের উপরেও নির্যাতন করতেন জাহিদ হাসান। দুই মেয়ে ও তার নিজের নিরাপত্তার অভাবের কথাও বলা হয় এজাহারে।
বাদীর ভাই আবু তাহের বলেন, দশ বছর আগে পারিবারিকভাবে জাহিদ হাসানের সাথে তার বোনের বিয়ে হয়। কিন্ত বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার বোনের উপর জাহিদ অমানবিক নির্যাতন করে আসছেন। এ নিয়ে বহুবার পারিবারিক ও বিভিন্নভাবে সালিশী বৈঠক হয়েছে। কয়েক দফায় নগদ টাকাসহ টেলিভিশন, ফ্রিজ ও মুল্যবান সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। এতেও মন ভরেনি তার।
তিনি অভিযোগ করে জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চাকুরির সুবাদে জাহিদ দীর্ঘদিন অন্য নারীতে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পরার বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তার বোন ঝুমুরের উপর নির্যাতনের মাত্রা চরম বেড়ে গেছে। তার বোন ভীষণ অসুস্থ থাকায় কারো সাথে এখন কথাও বলতে পারছেন না।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার একমাত্র আসামী জাহিদ পুলিশ হেফাজতে থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে, বাবা আব্দুস সোবাহান মন্ডলের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়, কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খোকসা থানার উপ-পরিদর্শক রাজু আহম্মেদ জানান, মামলাটি রেকর্ডের কয়েক ঘন্টার মধ্যে একমাত্র আসামী জাহিদকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
১২৮ বার পড়া হয়েছে