১০ বছর মেয়াদি ঋণ পুনঃতপশিলের সুযোগ, ব্যাংক দেবে সুবিধা

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:৩৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
খেলাপি ঋণ পুনঃতপশিল ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ছাড় ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এখন থেকে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ১০ বছরের জন্য খেলাপি ঋণ পুনঃতপশিলের সুযোগ পাবেন গ্রাহকরা। একইসঙ্গে থাকবে ২ বছরের গ্রেস পিরিয়ড ও সর্বনিম্ন সুদহারের চেয়ে ১ শতাংশ কম সুদের সুবিধা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দেশের সব ব্যাংকে পাঠানো এক সার্কুলারে এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকের হাতেই এখন সিদ্ধান্ত
এর আগে এই সুবিধাগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি অনুমোদনের ভিত্তিতে দেওয়া হতো। তবে এখন থেকে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তবে ৩০০ কোটি টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ‘নীতি সহায়তা সংক্রান্ত বাছাই কমিটি’র অনুমোদনের জন্য আবেদন করা যাবে।
আবেদনের সময়সীমা ও শর্তাবলি
এই সুবিধা নিতে হলে গ্রাহককে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ব্যাংককে আবেদনের ৬ মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। ডাউন পেমেন্ট চেক বা অন্য কোনও ইনস্ট্রুমেন্টের মাধ্যমে জমা দিলে তা নগদায়নের পর ৬ মাসের সময় গণনা শুরু হবে। আগের পুনঃতপশিল রেকর্ড থাকলে (তিনবার বা তার বেশি) অতিরিক্ত ১% ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে।
প্রভিশন ও শ্রেণীকরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা
বিশেষ সুবিধার আওতায় আনা ঋণ ‘এসএমএ’ শ্রেণীতে রাখতে হবে এবং সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রকৃত আদায় ছাড়া কোনও অর্থ ব্যাংকের আয় হিসাবে দেখানো যাবে না। সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণে নতুন করে আরেকটি সুবিধা দেওয়ার আগে গ্রাহকের অতীত লেনদেন ও আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে।
নীতিগত সীমাবদ্ধতা ও জালিয়াতি রোধে সতর্কতা
প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে নেওয়া ঋণ এই সুবিধার আওতায় আসবে না। ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে ঘোষিত গ্রাহকরাও এই সুবিধা পাবেন না। পুনঃতপশিল বা পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে গ্রাহকের ক্ষতির পরিমাণ এবং ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা যাচাই করতে হবে।
এক্সিট সুবিধা ও আইনি ব্যবস্থা
কেউ চাইলে এককালীন ‘এক্সিট’ সুবিধাও নিতে পারবে। সুবিধা পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহককে সোলেনামার মাধ্যমে চলমান মামলার স্থগিতাদেশের ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো গ্রাহক সুবিধার শর্ত ভঙ্গ করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং ব্যাংক ঋণ আদায়ে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারবে।
গত সরকারের সময় বিশেষ বিবেচনায় পুনঃতপশিল, পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হতো। তবে সরকার পরিবর্তনের পর ঋণ খেলাপির পরিমাণ বেড়ে বর্তমানে ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক পুনরায় বিশেষ বিবেচনার সুযোগ দিলেও এখন তা ব্যাংকের ওপর ছেড়ে দিয়েছে।
১০৪ বার পড়া হয়েছে