নায়করাজ রাজ্জাক: কিংবদন্তির চলে যাওয়ার আট বছর

বৃহস্পতিবার , ২১ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৪১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে তিনি ছিলেন এক অনন্য আইকন। ‘নায়করাজ’ উপাধিতে যেমন তিনি প্রশংসিত, তেমনি ছিলেন পুরো ইন্ডাস্ট্রির অঘোষিত অভিভাবক।
অভিনয়ের সৌন্দর্য ও ব্যতিক্রমী চরিত্র নির্মাণের মাধ্যমে যিনি হয়ে উঠেছিলেন ঢালিউডের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়—তিনি আব্দুর রাজ্জাক, আমাদের নায়করাজ।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) তাঁর প্রয়াণের আট বছর। ২০১৭ সালের এই দিনে ৭৫ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। সময় গড়ালেও থেমে নেই তাঁর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার জোয়ার।
১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় জন্ম নেন রাজ্জাক। কৈশোরেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক জন্ম নেয় তাঁর—সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই মঞ্চনাটকে অংশ নিতে শুরু করেন। দেশ ভাগের পরে চলে আসেন ঢাকায়। এখানেই শুরু হয় তাঁর রূপালি পর্দার যাত্রা।
১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে বাজিমাত করেন। সেখান থেকেই শুরু হয় নায়ক রাজ্জাকের দীর্ঘ ও সাফল্যে ভরপুর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার।
তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি—বাংলা এবং উর্দু দুই ভাষাতেই। তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর তালিকায় রয়েছে: ‘বেহুলা’, ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘এতটুকু আশা’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘অশিক্ষিত’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, এবং ‘বড় ভালো লোক ছিল’।
শুধু অভিনয়ে নয়, পরিচালনাতেও রেখেছেন তাঁর স্বাক্ষর। পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র। সিনেমায় এনেছেন নিজের দুই সন্তান—বাপ্পারাজ ও সম্রাট—যারা নিজেরাও দর্শকদের মন জয় করেছেন।
নায়করাজ রাজ্জাক ছিলেন সম্মাননায়ও সমৃদ্ধ। পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার খেতাব। পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা। ২০১৫ সালে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ‘স্বাধীনতা পুরস্কারে’ ভূষিত হন। বাচসাস, বাবিসাস এবং মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারেও পেয়েছেন আজীবন সম্মান।
নায়করাজ শুধু একজন নায়ক ছিলেন না, ছিলেন চলচ্চিত্র সংস্কৃতির প্রতীক। আট বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু রাজ্জাক আজও জীবন্ত তাঁর ভক্তদের হৃদয়ে, ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রতিটি স্মৃতিতে।
১২১ বার পড়া হয়েছে