ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজি চালকদের কর্মবিরতি: ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা

রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অযৌক্তিকভাবে গাড়ি জব্দ এবং লাইসেন্স ইস্যুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কর্মবিরতিতে নেমেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিএনজি চালক ও মালিকরা।
রোববার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কে সব ধরনের সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার শহরে প্রবেশ ঠেকাতেও বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন সিএনজি চালকেরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী, এমনকি রোগীরাও গন্তব্যে পৌঁছাতে চরম বিপাকে পড়ছেন।
সিএনজি চালকদের অভিযোগ, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও পুলিশ প্রতিদিন নানা অজুহাতে চাঁদা আদায় করছে। কোনো কারণ ছাড়াই জব্দ করা হচ্ছে গাড়ি। লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে বিআরটিএতে ঘুষ ছাড়া কাজ হচ্ছে না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
কাউতলি এলাকার চালক রহিম মিয়া বলেন, “আমার সব কাগজপত্র ঠিক আছে, তবুও পুলিশ আমাদের গাড়ি জব্দ করছে, মামলা দিচ্ছে। এখন আর সহ্য করা যাচ্ছে না। হয়রানি বন্ধ না হলে কর্মবিরতি চলবেই।”
চালক আনোয়ার জানান, “আগে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা দিতাম পুলিশকে, এখন না দেয়ায় আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিআরটিএতেও দুর্নীতি rampant, লাইসেন্স করাতে গেলেই ঘুষ চায়।”
সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সভাপতি হেবজুল করিম বলেন, “৫ আগস্ট নতুন ট্রাফিক ইনচার্জ আসার পর থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। তিনি সরাসরি আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। প্রতিটি গাড়ির বিরুদ্ধে ২০-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত মামলা দিচ্ছেন। শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছি। সমাধান না এলে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়বে।”
অন্যদিকে সিএনজি চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। বিকল্প পরিবহন না থাকায় অনেকে দীর্ঘ পথ হেঁটে যাতায়াত করছেন।
বিজয়নগর থেকে আসা যাত্রী মিজানুর রহমান বলেন, “শহরে আসতে চার-পাঁচবার গাড়ি পাল্টাতে হয়েছে। অনেক কষ্টে এসেছি। দ্রুত সমাধান না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।”
একই রকম ভোগান্তির কথা জানান এনামুল হক নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, “সিএনজি বন্ধ, অটোরিকশাও ঢুকতে দিচ্ছে না শহরে। আমি সুহিলপুর থেকে হেঁটে এসেছি। অনেকেই রোগী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।”
সবার দাবি, অবিলম্বে চালকদের সমস্যা সমাধানে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিক, যাতে মানুষ স্বাভাবিক যাতায়াতে ফিরতে পারে।
১০৭ বার পড়া হয়েছে