কিভাবে যাচাই করা হলো শেখ হাসিনার ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি’ অডিও-ভিডিও

বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫ ৭:৩২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন ও সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপ ও সংশ্লিষ্ট ভিডিও ফাঁস হয়, যেখানে তাকে নিরাপত্তা বাহিনীকে “প্রাণঘাতী অস্ত্র” ব্যবহারের নির্দেশ দিতে শোনা যায়।
এই ভিডিও ও অডিওর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এবং স্বাধীন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল একাধিক ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়।
প্রথমে ভিডিও ও অডিওর কনটেন্ট বিশ্লেষণ করা হয়, যেখানে কণ্ঠস্বর, চেহারা ও পরিবেশগত উপাদান মিলিয়ে দেখা হয় ফাঁস হওয়া ভিডিওটি কোনো ধরনের এডিটিং, কৃত্রিমতা বা বিকৃতি আছে কি না। ফরেনসিক অডিও বিশ্লেষকরা ভিডিওর শব্দতরঙ্গ, ব্যাকগ্রাউন্ড নোয়েজ, বিদ্যুৎ-নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি (ENF) এবং পরিবেশগত শব্দের সঙ্গে মূল ঘটনার সময় ও স্থানের মিল খুঁজে দেখেন। এতে কোনো ধরনের ডিজিটাল ম্যানিপুলেশন বা কৃত্রিম সংযোজন পাওয়া যায়নি।
এরপর বাংলাদেশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (CID) ভিডিওর কণ্ঠস্বর বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত করে, এটি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর। ভিডিওর দৃশ্যমান অংশের সঙ্গে পূর্বের সরকারি ফুটেজ ও জনসমক্ষে শেখ হাসিনার উপস্থিতির ভিডিওর তুলনাও করা হয়, যাতে মুখভঙ্গি, উচ্চারণ ও পরিবেশগত মিল পাওয়া যায়।
স্বাধীন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ভিডিওর মেটাডেটা, টাইমস্ট্যাম্প, ফাইল কনটেন্ট, কমপ্রেশন আর্টিফ্যাক্টসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত দিক পরীক্ষা করেন। তারা নিশ্চিত করেন, ভিডিওটি ঘটনার সময়েই ধারণ করা এবং কোনো ধরনের পরবর্তীকালের সম্পাদনা বা সংযোজন নেই।
সবশেষে, ভিডিও ও অডিওর ফরেনসিক বিশ্লেষণ, প্রযুক্তিগত যাচাই এবং কণ্ঠস্বর পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিশ্চিত করে, ফাঁস হওয়া ভিডিওটি সত্য এবং এতে কোনো কারসাজি নেই। এই ভিডিও এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার মূল প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
১১১ বার পড়া হয়েছে