চিকিৎসাধীন ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫ ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বরেণ্য লালনগীতি শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। সম্প্রতি আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে এই একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পীকে।
সোমবার দুপুরে ফরিদা পারভীনের স্বামী, বাঁশিবাদক গাজী আবদুল হাকিম বলেন, “রোববার থেকে তাকে সাধারণ কেবিনে রাখা হয়েছে। তবে এখনও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি।”
৭১ বছর বয়সী এই শিল্পী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। সম্প্রতি পরপর তিনদিন ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। এটি ছিল তার তৃতীয়বারের মতো নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি।
চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করলে সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক সহযোগিতার প্রস্তাব আসে। তবে ফরিদা পারভীনের পরিবার সরাসরি অর্থ নয়, বরং একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রক্রিয়া পরিচালনার অনুরোধ জানিয়েছে।
গাজী আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা টাকা চাই না। ফরিদা পারভীন রাষ্ট্রীয় সম্পদ। তার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সরকার চিকিৎসার উদ্যোগ নিতে পারে। প্রয়োজনে বিদেশেও পাঠানো যেতে পারে। এটি একমাত্র সরকারের পক্ষেই সম্ভব।”
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিউমোনিয়াজনিত জটিলতায় ১৩ দিন আইসিইউতে ছিলেন ফরিদা পারভীন। তখনও পরিবারকে একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়।
ফরিদা পারভীন সংগীত ক্যারিয়ারের শুরুতে নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান করলেও পরবর্তীতে লালনসংগীতে নিজেকে নিবেদিত করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে তালিম নিয়ে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ধারার গান প্রচার করে যাচ্ছেন তিনি।
সংগীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক এবং ২০০৮ সালে জাপান সরকারের 'ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার' পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৯৩ সালে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
প্রজন্মের পর প্রজন্মকে লালনসংগীতের চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে ২০০৮ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘অচিন পাখি সংগীত একাডেমি’। তবে শিল্পীর অসুস্থতা, আর্থিক সংকট এবং প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ভবন না থাকায় একাডেমিটিও বর্তমানে টিকে থাকার লড়াইয়ে রয়েছে।
পরিবারের দাবি, “চিকিৎসা খরচের বিষয়টি আমরা সামাল দিচ্ছি। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ ও সুসমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতি ছাড়া শিল্পীর সুস্থতা নিশ্চিত করা কঠিন। এ বিষয়ে সরকার আন্তরিক হলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।”
১২৪ বার পড়া হয়েছে