পান পাগল সবাই জেনে নিন কোথায় পানের দাম সস্তা

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫ ৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দিনের আলো মিলিয়ে সন্ধ্যা নামতেই জমে ওঠে কোটি টাকার পানের হাট।
বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকার টরকী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নীলখোলা এলাকায় সপ্তাহে পাঁচদিন বসে এই ব্যতিক্রমী হাট। বৃহস্পতি ও সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সরগরম থাকে এ হাট।
দিনের আলোতে বসে সাধারণ হাট-বাজার, আর এই হাট জমে ওঠে সন্ধ্যার পর। একেক দিনে এই পানের হাটে কেনাবেচা হয় কোটি টাকার পান, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
হাট কেন্দ্র করে ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে কাঁচাবাজার, মাছ বাজারসহ নানান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যা এখন স্থানীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
সন্ধ্যায় জমে ওঠে কর্মচাঞ্চল্য
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকার পানচাষিরা সন্ধ্যার পর ভ্যানে করে বরজের পান নিয়ে আসেন পছন্দের আড়তে। এরপর শুরু হয় পান গোছানোর কাজ। এলাকাটির প্রায় অর্ধশতাধিক পানের আড়তে প্রতিটিতে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। এই আড়তগুলোর ওপরই নির্ভর করে চলে তাদের সংসার।
কোটি টাকার বাণিজ্য
পান ব্যবসায়ী শাহজাহান তালুকদারসহ কয়েকজন পাইকার জানান, তারা নিয়মিত নীলখোলা পানের আড়ত থেকে পান ক্রয় করেন। প্রতিদিন একজন পাইকার ১০-১২ লাখ টাকার পান কিনে থাকেন। এসব পান সরবরাহ করা হয় ঢাকা, সিলেট, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
স্থানীয় চাষিরা জানান, আগে গ্রামের হাটে পান বিক্রি করতে হতো। অনেক সময় পান অবিক্রীত থেকে যেত। এখন আড়ত গড়ে ওঠায় সে সমস্যার সমাধান হয়েছে। তারা জানান, বর্তমানে একেক বিড়া পান বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১৫০ টাকায়। শীতের সময় এ দাম আরও বেড়ে যায়।
গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার শেখ বলেন, “এ উপজেলায় প্রায় ৬৮০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। আমরা চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে, আশা করছি চাষিরা ভালো লাভ করবেন।”
পানচাষি, শ্রমিক, পাইকার ও আড়তদার—সব পক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণে সন্ধ্যার পর নীলখোলা এলাকার পানের হাট এখন শুধু একটি হাট নয়, হয়ে উঠেছে স্থানীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি।
১১৯ বার পড়া হয়েছে