৬৫ বছরে পদার্পণ: ঐতিহ্যের বাতিঘর পাবনা প্রেসক্লাব

বৃহস্পতিবার , ১ মে, ২০২৫ ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতার ধারাবাহিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ৬৫ বছরে পদার্পণ করল গৌরবময় প্রতিষ্ঠান পাবনা প্রেসক্লাব।
১৯৬১ সালের ১ মে যাত্রা শুরু করা এই সংগঠনটি আজও অটুট ঐক্য, সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা এবং সংগ্রামী চেতনার প্রতীক হয়ে বিরাজমান।
উপমহাদেশের মহানায়িকা সুচিত্রা সেন, গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী, ওস্তাদ বারীন মজুমদার, কবি বন্দে আলী মিয়া ও অধ্যাপক মনসুর উদ্দিন আহমেদের জন্মভূমি পাবনা, একসময়ে সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রাগগুরু হিসেবেই পরিচিত ছিল। এই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠা পাবনা প্রেসক্লাব একাধারে সাংবাদিকতার আলো এবং সংগ্রামের পাথেয়।
প্রথম সভাপতি একেএম আজিজুল হক বিএসসি ক্যাল এবং প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রণেশ মৈত্র। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি এম আনোয়ারুল হক, চিকিৎসক মেজর (অব.) ডা. মোফাজ্জল হোসেন, শহীদ মাওলানা কছিমুদ্দিন আহমেদ ও ফটোগ্রাফার হিমাংশু কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
বর্তমানে পাবনা প্রেসক্লাবের সদস্য সংখ্যা ৬৫। এর মধ্যে আছেন ভাষাসৈনিক, একুশে পদকপ্রাপ্ত, মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজবরেণ্য ব্যক্তিত্বরা। আজীবন সদস্য হিসেবে আছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, স্কয়ার টয়লেট্রিজের এমডি অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, প্রয়াত এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) একে খন্দকার ও স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরী।
প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠার বছরেই ৮ ও ৯ মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান মফস্বল সাংবাদিক সম্মেলন, যার মাধ্যমে মফস্বল সাংবাদিকরা পেশাগত স্বীকৃতি লাভ করেন। সে সম্মেলন থেকেই জন্ম নেয় বর্তমানের বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি।
৬৪ বছরের এই দীর্ঘ পথচলায় পাবনা প্রেসক্লাব হয়ে উঠেছে সাংবাদিকতার ‘বাতিঘর’। মুক্তিযুদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন—সব কিছুরই সাক্ষী এই ক্লাবের সদস্যরা। ৯ জন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৩ জন একুশে পদকপ্রাপ্ত।
যদিও ক্লাবটির নিজস্ব ভবন এখনও হয়নি, তবুও পরিত্যক্ত ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক অফিস, ভিআইপি মিলনায়তন ও লাইব্রেরি। মর্যাদা ও ঐতিহ্যে ক্লাবটি আজও দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম উদাহরণ হয়ে রয়ে গেছে।
৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠান। ৩০ এপ্রিল আলোকসজ্জায় সাজানো হয় ক্লাব চত্বর। ১ মে অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা, কেক কাটা ও সম্মাননা প্রদান। ২ মে সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।
সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার বলেন, “পাবনা প্রেসক্লাব আমাদের গর্ব, ঐতিহ্য ও অহংকারের নাম। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাক্ষী এই ক্লাবটি আগামীতেও সাংবাদিকতার আলো জ্বালিয়ে যাবে।”
১০৩ বার পড়া হয়েছে