সর্বশেষ

সারাদেশ

জমি দখল ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ

বাগুলাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল হক নবার দাপটে বাড়ছে অপরাধ

কুমারখালী প্রতিনিধি
কুমারখালী প্রতিনিধি

বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ ৭:৫০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল হক নবার দাপটে তটস্থ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। স্থানীয় আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি হওয়ায় তিনি ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। এতে তার দুই ছেলেও হয়ে উঠেছে বেপরোয়া।

সরকারি জমি দখল, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ এবং নিজে সম্পৃক্ত থেকে দুই ছেলেকেও জড়িয়েছেন মাদক ব্যবসায়। আর মাদকের টাকা তিনি ব্যবহার করছেন এলাকা অস্থিতিশীল করার কাজে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকার মানুষ।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, চেয়ারম্যান আজিজুল হক নবার জোরপূর্বক সরকারি জমি দখল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

 

জানা গেছে, জিলার সরকারি ১৯ বিঘা জমি নিয়ে আদালতে মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে (মামলা নং ১৭২৮৫/২০১৭)। এরপরও চেয়ারম্যান ওই জমির উপর নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এলাকার একটি স্কুলের পুকুরও তিনি নিজেদের নামে লিজ নিয়েছেন মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে। তবে, স্কুল কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানের সময় তার ছেলের নামে পুকুরটি লিজ দেওয়া হয়েছিল।

 

স্থানীয়দের দাবী, চেয়ারম্যান নবা ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত সরকারি চাল, গম ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাৎ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউপি সদস্যরা জানান, চেয়ারম্যানের হাতে অধিকাংশ সরকারি বরাদ্দ চলে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ ত্রাণের সামান্য অংশও পাচ্ছে না।

 

অন্যদিকে, নবার দুই ছেলে, টিপু ও সাবু দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসায় যুক্ত রয়েছে। বিশেষ করে দমদমা, রামবাজার ও খালবাজার এলাকায় তারা প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে। স্থানীয় ভুক্তভুগীরা দাবি করছেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব রয়েছে। ফলে দুই ছেলের অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে। 

বাগুলাট হাইস্কুলের সভাপতি থাকাকালে কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েও করেছেন বাণিজ্য। প্রতি শিক্ষক নিয়োগে নিয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। স্কুলও তার বাণিজ্যের বাইরে না থাকায় শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। বিক্ষুব্ধরা নবা চেয়ারম্যানের শাস্তি চান।

 

চেয়ারম্যান আজিজুল হক নবা অভিযোগগুলোর সত্যতা জানতে চাইলে বলেন, আমি কোনও সরকারি জমি দখল করি না এবং আমি মামলার বিষয়ে কিছু জানি না। মাদক সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, এলাকার প্রতিপক্ষের কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে তিনি শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বাণিজ্যের বিষয়টি এড়িয়ে যান।

 

স্থানীয়রা বলছেন, শুধু বাগুলাট ইউনিয়নের পরিস্থিতি এমন নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মাঝে এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, যা দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। জনগণের দাবি, প্রশাসন দ্রুততম সময়ে আজিজুল হক নবা এবং তার ছেলেদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করুক, যাতে এলাকায় একটি মাদকমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব হয়।

 

জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, প্রশাসন সঠিকভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করলে, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ঘটবে এবং যুবসমাজ মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি চেয়ারম্যান আজিজুল হক নবা ও তার ছেলদের মাদকের কারবার থেকে যুবসমাজ রক্ষা পাবে।

 

বাগুলাট হাইস্কুলে শিক্ষক নিয়ে বাণিজ্যের বিষয়ে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতির অনিয়মের বিষয়ে সঠিক তদন্ত করা হলে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।

১৪৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন