পদ্মা নদীতে বিরল জলঘূর্ণি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ ৭:২৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলা এলাকায় পদ্মা নদীতে হঠাৎ করে এক জলঘূর্ণি বা টর্নেডোর সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে নদীর মাঝ থেকে একটি পানির স্তম্ভ ফানেলের মতো আকৃতি ধারণ করে আকাশের দিকে উঠে যায়। প্রায় দুই মিনিট স্থায়ী এ ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পদ্মার বুক চিরে এক বিশাল জলস্তম্ভ ওপরে উঠে যাচ্ছে। ভিডিওতে লোকজনকে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে দেখা যায়। কিছু সময় পর ধীরে ধীরে স্তম্ভটি অদৃশ্য হয়ে যায় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “পদ্মা নদীতে হাটখোলা এলাকা থেকে টর্নেডোটি সৃষ্টি হয়ে ভেড়ামারার দিকে অগ্রসর হয়। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”
এ বিষয়ে কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ও ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানান, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও দেখে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের অপারেটর হারুন আর রশীদ বলেন, “আমিও ফেসবুকে ভিডিওটি দেখেছি, তবে আমাদের অফিসে এ নিয়ে কোনো সরাসরি তথ্য আসেনি।” একই কথা জানান ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীন।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, কোনো এলাকায় নিম্নচাপ বা লঘুচাপ সৃষ্টি হলে সেখানে উষ্ণ বাতাস ওপরের দিকে উঠে যায়। এর ফলে ওই শূন্য স্থানে চারপাশের শীতল বাতাস প্রবল বেগে ঢুকে পড়ে এবং ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়। এই ঘূর্ণাবর্তই পরিণত হয় টর্নেডোতে। যদি এটি কেবল পানির ওপর তৈরি হয়, তবে তার শক্তি তুলনামূলকভাবে কম থাকে। তবে ভূমি ও পানির সংমিশ্রণে তৈরি টর্নেডো অনেক সময় ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টর্নেডো সাধারণত সরু ফানেলের মতো দেখতে হয় এবং এটি যাত্রাপথে যা পায় তা নিজের ভেতর টেনে নেয়। কখনো কখনো এ ধরনের জলঘূর্ণি নদী বা জলাশয়ের পানি টেনে নিয়ে আকাশে মেঘ তৈরি করে, যা পরবর্তীতে বৃষ্টিতে পরিণত হয়।
১১৮ বার পড়া হয়েছে