ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজ সংঘর্ষে উত্তপ্ত এলাকা, আহত অন্তত ৭

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ ৪:৪৭ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও নিউ মার্কেট এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন অন্তত সাতজন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় আগের দিন, যখন ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে মারধর করা হয়। ওই ঘটনায় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়িত বলে দাবি করে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। এর জেরে আজ সকালে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের সামনে এসে হামলা চালান।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সোমবারের মারধরের সময় অভিযুক্তদের গায়ে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক ছিল না। তবুও আজকের ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজে হামলা ও ভাঙচুর করেন।
সিটি কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, হামলার সময় আশপাশে উপস্থিত থাকা ৫০ থেকে ১০০ জন পুলিশ সদস্য নিষ্ক্রিয় ছিলেন। কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোবারক হোসেন বলেন, “যদি পুলিশ সময়মতো পদক্ষেপ নিত, তাহলে এই হামলা ও ভাঙচুর ঠেকানো যেত।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষকদের দায়িত্ব নয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, এটা প্রশাসনের দায়িত্ব। যারা আজ হামলা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।”
রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “গতকালের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আজ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে আলাদা করেছি। তবে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত ছিল যে, এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশকেও লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে পুলিশ সদস্যরাও আহত হন।”
তিনি জানান, সংঘর্ষে পুলিশের ২০-২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
দুপুর পৌনে ১২টা থেকে শুরু হয়ে এই সংঘর্ষ চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। পুরো সময় জুড়ে শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে।
সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, “এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রায় সময়ই দুই কলেজের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে। আমরা শিক্ষক সমাজ একত্র হয়ে সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, এর আগেও ১৫ এপ্রিল দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, পথেঘাটে দলবদ্ধ অবস্থান এবং পরস্পরের প্রতি উত্তেজনা – এসবই নিয়মিত এমন পরিস্থিতির জন্ম দিচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।
অধ্যক্ষ মোবারক হোসেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাউশি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
১২৫ বার পড়া হয়েছে