সর্বশেষ

সারাদেশ

হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, ব্যস্ত তাহিরপুরের কৃষকরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ ৫:২৫ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাওরের বোরো ধান ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বৈশাখের শুরু থেকে সীমিত পরিসরে ধান কাটা শুরু হলেও বর্তমানে পুরোদমে ধান কাটার কাজ চলছে।

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ফলন ভালো হওয়ায় খুশি হাওরাঞ্চলের চাষিরা।

উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কৃষকরা শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে গরুর গাড়ি বা ট্রলিতে করে খলায় এনে মাড়াই করছেন, আবার কোথাও কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে খেতেই কাটা ও মাড়াই করে ধান খলায় এনে শুকানো হচ্ছে। খলায় নারী-পুরুষ, এমনকি স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ধান ও খড় শুকানোর কাজে অংশ নিচ্ছে। পরে কৃষকরা মাথায় করে সেই ধান বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ২৩টি ছোট-বড় হাওরে মোট ১৭ হাজার ৫০৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এতে আনুমানিক উৎপাদন হবে ৬৮ হাজার ৬১৮ টন ধান, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। বর্তমানে প্রায় ১৫ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূচির আওতায় ৭০টির বেশি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার হচ্ছে ধান কাটায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও এখন পর্যন্ত আবহাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন কৃষকরা।

মাটিয়ান হাওরের বড়দল গ্রামের কৃষক সামাইয়ূন কবির জানান, তিনি ১৪ কেয়ার জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ১০ কেয়ার ধান কেটে শুকিয়ে নিয়েছেন, প্রতি কেয়ারে ২০-২১ মণ ফলন পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

রতনশ্রী গ্রামের কৃষক আশিকনুর বলেন, “বৃষ্টিপাতের খবর শুনে চিন্তিত ছিলাম। তবে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে, তাই ধান কাটায় গতি এসেছে।”

ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আহমাদুল জানান, তিনি ১২ কেয়ার জমিতে ধান চাষ করেছেন, এর মধ্যে ২ কেয়ারের ব্র্যাক-৭৭৭ জাতের ধান ঘরে তুলেছেন। তিনি প্রত্যাশা করছেন কেয়ারপ্রতি ২০ মণ ফলন পাবেন।

এদিকে, বৈশাখের শুরুতে কৃষক বাবাকে সাহায্য করতে বাড়িতে এসেছে কলেজ শিক্ষার্থী স্বর্ণাভ হাসান। তিনি বলেন, “প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত থাকি।” তার মতো হাজারো শিক্ষার্থী এই সময়ে কৃষি কাজে পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে পুরো ধান ঘরে তোলা সম্ভব হবে।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাসেম জানান, মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন যে হাওরে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কাটায় কৃষকদের সহায়তা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে হারভেস্টার মালিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

১৪৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন